
চট্টগ্রাম এবং বরিশাল বিভাগসহ দেশের কিছু অঞ্চলে বাড়ছে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা। চোখ ওঠা ভা'ইরাসজনিত একটি রোগ। এ রোগ হলে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কতার অবলম্বন করার পরামর'্শ দিচ্ছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞদের।
চোখ উঠলে কখনো কখনো এক চোখে অথবা দুই চোখেই জ্বা'লা করে এবং লাল হয়ে চোখ ফুলে যায়। চোখ জ্বলা, চুলকানি, খচখচে ভাব থাকা, চোখ থেকে পানি পড়া, চোখে বার বার সাদা ময়লা আসা, কিছু ক্ষেত্রে চোখে তীব্র ব্যথা এ রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ।
চিকিৎসকরা বলছেন, গরমে আর বর্ষায় চোখ ওঠার প্রকোপ বাড়ে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটিকে কনজাংটিভাইটিস বা কনজাংটিভার বলা হয়। তবে এ সমস্যাটি চোখ ওঠা নামেই বেশি পরিচিত। রোগটি ছোঁয়াচে ফলে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
চোখের একেবারে বাইরের স্বচ্ছ অংশটির ডাক্তারি নাম ‘কনজাংকটিভা’। ভা'ইরাসের সংক্রমণে সেখানে তৈরি হয় প্রদাহ, ফুলে যায় চোখের ছোট ছোট র'ক্তনালি। ফুলে থাকা র'ক্তনালিগু'লোর কারণেই চোখের রং লালচে হয়ে যায়, যেটাকে চোখ ওঠা বা ‘কনজাংকটিভাইটিস’ বলা হয়।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামের বেশিরভাগ ঘরেই এখন চোখ ওঠা রোগী। হাসপাতালগু'লোর বহির্বিভাগে বেড়েছে আ'ক্রা'ন্তের সংখ্যা। রোগী বাড়ায় দেখা দিয়েছে চোখের ড্রপের সংকট। এছাড়াও বরিশালের কিছু অঞ্চলেও চোখ ওঠা রোগের প্রকো'প বাড়ছে।
আ'ক্রা'ন্তদের উল্লেখযোগ্য অংশই শিশু। সাধারণত এক স'প্তাহের মধ্যেই এই রোগ সেরে যায়। তবে জটিল রূপ ধারণ করলে বিশেষজ্ঞের পরামর'্শ নেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
কনজাংটিভাইটিস রোগটি আ'ক্রা'ন্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে ছড়ায়। রোগীর ব্যবহার্য বস্তু যেমন রুমাল, তোয়ালে, বালিশ, টিস্যু অন্যরা ব্যবহার করলে অন্যরাও এতে আ'ক্রা'ন্ত হয়। এছাড়া কনজাংটিভাইটিসের জন্য দায়ী ভা'ইরাস বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়। আ'ক্রা'ন্ত ব্যক্তির আশপাশে যারা থাকে, তারাও এ রোগে আ'ক্রা'ন্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
চোখ ওঠা রোগে করণীয়:
চোখ ওঠা ছোঁয়াচে রোগ। বাতাসের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে, তবে সবচেয়ে বেশি ছড়ায় বার বার হাত চোখে দিলে। হাত সাবান দিয়ে ধুতে হবে। চোখের পানি সাবধানে টিস্যু দিয়ে মুছে নিতে হবে। ব্যবহার করা সেই টিস্যু সাবধানে নিরাপদ স্থানে ফেলতে হবে। যাতে করে রোগ না ছড়ায়।
চোখ ঘষা বা চুলকানো থেকে বিরত থাকতে হবে। চিকিৎসকের পরামর'্শে আই ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে। রোগীর ব্যবহার করা সামগ্রী অন্যদের ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। এক চোখে সমস্যা দেখা দিলে অন্য চোখকে সংক্রমণ থেকে নিরাপদে রাখতে হবে। সমস্যা এক স'প্তাহের মধ্যে না সারলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর'্শ নিতে হবে।
চোখ ওঠা রোগ বি'ষয়ে ব'ঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শাহনুর হাসান লেন, চোখ ওটা রোগকে আমর'া ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস বলে থাকি। এটা সিজনাল একটি রোগ। গরমে এবং বৃষ্টিতে এই রোগ বেশি হয়। ঋতু পরিবর্তনের ফলে এই ভাইরাল ইনফেকশন হচ্ছে।
এ রোগে সতর্কতা প্রস'ঙ্গে তিনি বলেন, চোখ ওঠা রোগ হলে, আতঙ্কিত হওয়া যাব'ে না। ভা'ইরাসজনিত এ রোগ যার হবে, সেজন্য অন্যের সংস্পর্শে না আসে। রোগীর ব্যবহার করা তোয়াল, বিছানা, বালিশ যেন অন্য কেউ ব্যবহার না করে। বাচ্চাদের চোখ উঠলে, স্কুলের অন্য বাচ্চাদের সুরক্ষিত রাখতে সে যেন কিছু দিন স্কুলে না যায়। ভা'ইরাস জ্বর যেমন ৫/৭ দিনে ভালো হয়ে যায়, এটাও তেমন এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর'্শ নিয়ে চোখ ওঠা নিশ্চিত হয়ে এন্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
Leave a Reply